কক্সবাজারের মহেশখালীতে ৫৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মাতারবাড়ী ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। কয়লা আমদানি করতে না পারায় এখান থেকে বিদ্যুৎ কিনতে পারছে না বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এর আগে কয়লা সংকটের কারণে গত সেপ্টেম্বর থেকে উৎপাদন বন্ধের শঙ্কার কথা জানিয়ে আসছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা। শেষমেশ ২৫ অক্টোবর থেকে এর দুটি ইউনিটে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন— নভেম্বরের শেষদিকে প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হতে পারে। যদিও বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের দাবি, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের কারণে বন্ধ রয়েছে, কয়লা সংক্রান্ত কোনো সংকট নেই। তবে সঞ্চালন সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ওয়েবসাইটে উল্লেখ রয়েছে, কয়লা সংকটের কারণে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
জানা যায়, বাংলাদেশে নির্মিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ৫১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা দিচ্ছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা, বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। আগামী ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে আরও ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা রয়েছে।
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে এ প্রকল্পকে ‘প্রকল্প বিলাস’ বলে অভিহিত করেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এই প্রকল্প থেকে সাধারণ মানুষ খুব বেশি উপকৃত হচ্ছে না বলেও সেসময় মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।
কয়লা সংকটের কারণে কবে থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নাজমুল হক অপর এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বর্তমানে মেইনটেন্যান্সে রয়েছে। এ কারণেই দুটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। এ মাসের শেষের দিকে চালু হবে। অন্য কোনো কারণ নেই। নভেম্বরের শেষ নাগাদ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’